সোমবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

ব্লগ পলিটিক্স ২ : যেভাবে সামহোয়্যারে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়, প্রেশার তৈরি করা হয়

আমাদের অনেকেরই ব্লগিংয়ে হাতেখড়ি হয়েছে সামহোয়্যারইন...ব্লগে। সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমরা সবাই পড়েও আছি এই ব্লগে। সুখে-দুঃখে-শান্তিতে-সংগ্রামে। ইন্টারনেটে সহজে বাংলা লেখার সুযোগ আমরা এই ব্লগেই পেয়েছিলাম। পুরোপুরি অলাভজনকভাবে ব্লগটি আজ প্রায় তিন বছর ধরে চলে এখন বাংলাভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের নানা ঘাটতি ছিল, সীমাবদ্ধতা ছিল। তারপরও আমরা যেভাবেই হোক না কেন বাংলাভাষায় ব্লগিংয়ের একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি। প্রতিদিনই এখানে নতুন নতুন মুখ ব্লগে আসছে। পুরনো ব্লগারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে। সবমিলিয়ে একটি প্রাণবন্ত পরিবেশই এখানে আছে বলা যায়। কিন্তু অল্প কয়েকজন লোক শ্রেফ নিজেদের হীন স্বার্থে কিছুতেই চায় না সামহোয়্যারইন ব্লগে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ থাকুক। তারা কৌশলে একের পর এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সাধারণ ব্লগারদের উত্যক্ত করে। প্রতি ঋতুতে ব্লগ ত্যাগের হুমকি দেয়, যেন তারা গেলে ব্লগ ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আসলে সামহোয়্যারইনের একটা অদম্য আকর্ষণ আছে। আসলে এখান থেকে কেউ কখনো যায় না। যারা যাওয়ার ঘোষণা দেয়, তারা ঠিকই অন্য নিকে ফিরে আসে। ব্লগের শুরুর দিকের একজন ব্লগার চোর ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছিলেন। কিন্তু পরদিন থেকে তিনি অন্য নিকে সামহোয়্যারে ঠিকই ছিলেন। ব্যাপার না।

আজকের পর্বে দেখুন সামহোয়্যারকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে এ-টিমের একটি পরিকল্পনা। ইতিহাসের কী নির্মম পরিণতি। এই আলোচনায় যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কারো ব্লগ বাতিল হয়ে গেছে, কেউ পোস্ট ব্যাকআপের হুমকি দেয়, কেউ হ্যাকার-স্ক্রিপ্ট কিডির ব্যর্থ পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটক রচনা করেন, মুখোশ উন্মোচন হয়ে যাওয়ায় কেউ আবার এ-টিম সদর দফতরের ডাইহার্ড পুরনো যোদ্ধাকেও অস্বীকার করেন, আবার কেউ দিনের পাঁচ ওয়াক্তে পাঁচবার খাবারদাবার পিঠাঘরের অ্যাডভার্টাইজ করছেন।

স্ক্রিনশটটি দেখুন। বিশ্লেষণ করুন। ভেবে দেখুন, কাদের খেলার পুতুল হয়ে আছি আমরা সবাই? বিচার আপনার হাতে। তারপরও হাসিবের ব্লগ বাতিল হোক- তা চাই না।

ব্লগ পলিটিক্স ১ : সারওয়ার চৌধুরীদের ব্লগ যেভাবে বাতিল করানো হয়

সারওয়ার চৌধুরী সামহোয়্যারইন ব্লগে গল্প লিখতেন, কবিতা লিখতেন, মাঝে মাঝে প্রবন্ধ-নিবন্ধও। ধর্মপ্রীতি ছিল তার, তবে তাকে আমার কখনো ধর্মান্ধ মনে হয়নি। চেনা কিছু মুখের নিয়মিত অত্যাচারও চরম ধৈর্য নিয়ে সয়ে যেতেন। হঠাৎই একদিন দেখা গেল, তার পুরো ব্লগই বাতিল হয়ে গেছে। ব্লগ মুছে দেওয়া হয়েছে।

আমরা জানলাম, মৎস্যকন্যা নামের এক নিকের সঙ্গে নাকি তার কী কী যেন হয়েছে। এর ফলস্বরূপ তার পুরো ব্লগই বাতিল। কর্তৃপক্ষের তাতে দোষ ছিল না। একটি চক্র তাদের ক্রমাগত ভুল বুঝিয়েছে, ভুল তথ্য দিয়েছে, মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে। তাতে বিভ্রান্ত হয়ে একপর্যায়ে দেখা গেল সারওয়ার চৌধুরীর ব্লগ আর নেই। সেই ব্লগে কয়েকশত লেখা ছিল তার। একজন লেখকের সন্তানসম লেখাগুলোর সবই একদিন হাওয়া হয়ে গেল।

নেপথ্যে পুরো কলকাঠি নেড়েছে এই ব্লগেরই কিছু চিহ্নিত মুখ। মফস্বলের এক কবি মৎস্যকন্যা নিকে মেয়ে সেজে পুরো কাজটি করেছিল। তাকে সহায়তা দিয়েছিলেন একজন "জনপ্রিয় ব্লগার" ও একজন প্রবাসী ব্লগার। ইতিহাসের কী নির্মম পরিণতি। আজ সেই মুখগুলোর কারো ব্লগ বাতিল হয়ে গেছে, কেউবা পোস্ট ব্যাকআপ করছেন, আবার কেউবা প্রতি ওয়াক্তে খাবারদাবারের পোস্ট দিচ্ছেন।

স্ক্রিনশটগুলো দেখুন। বিশ্লেষণ করুন। ভেবে দেখুন, কাদের খেলার পুতুল হয়ে আছি আমরা সবাই? বিচার আপনার হাতে। তারপরও হাসিবের ব্লগ বাতিল হোক- তা চাই না।